আঃ আজিজ দিনাজপুর প্রতিনিধিঃ মানুষের মৌলিক পাঁচটি চাহিরিদা মধ্যে স্বাস্থ্য একটি অন্যতম চাহিদা। শারীরিক সুস্থতা না থাকলে মানুষের সকল সুখই ম্লান হয়ে যায়। সুস্থ ও স্বাস্থ্যসন্মত জীবন পেতে মানুষের লড়াই এখন তুঙ্গে। সুস্থ ও স্বাস্থ্যসন্মত জীবন নিয়ে বাঁচতে দিনাজপুর জেলার বিরামপুর উপজেলা ৫০ শয্যা বিশিষ্ট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেটি এখন বিরামপুর সহ আসপাশের সকল মানুষের চিকিৎসা সেবার একমাত্র প্রাণকেন্দ্রে পরিনত হয়েছে।
বর্তমানে চিকিৎসক স্বপ্লতার কারণে দীর্ঘদিন ধরে সঠিক চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হয়ে আসছেন বিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসা বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত ভূক্তভোগী রোগীরা। বিভিন্ন কারণে অত্র স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বিভিন্ন বিভাগে চিকিৎসক না থাকায় মেডিকেল সহকারিদের চিকিৎসকদের আসনে বসে হাসপাতালের টোকেন প্রাপ্ত রোগীদের শারীরিক সমস্যা শুনেই টোকেনে মাধ্যমে ঔষধ প্রদানের ঘটনায় অভিযোগ উঠেছে। সেই কারনেই রোগীদের সাথে মেডিকেল সহকারিদের সাথে রোগীদের তর্ক-বিতর্কের ঘটনাও ঘটছে বলে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসা রোগীরা অভিযোগ করে জানিয়েছেন।
ঘটনার সত্যতা জানতে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ১০৮ নং কক্ষে গিয়ে রোগীদের সেবা প্রদানকারী মেডিকেল সহকারি হিসেবে জনৈক ব্যক্তির সাথে কথা হলে তিনি নাম প্রকাশ না করে বলেন, অত্র স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক না থাকায় কর্তৃপক্ষের নির্দেশক্রমেই রোগীদের শারীরিক সমস্যা তাঁদের মুখে শুনেই রোগ নিরাময়ের জন্য ঔষধ লিখে দিচ্ছি। তবে তিনি নিজেকে একজন মেডিকেল সহকারী হিসেবে পরিচয় দিয়েছেন।
বিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রতিদিন অত্র উপজেলাসহ বাহিরের বেশ ক'টি উপজেলার রোগীরা স্বাস্থ্যসেবা নিতে আসেন। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ৩ টাকায় সংগ্রীত টিকিট কাউন্টারে গিয়ে মিলেছে ভিন্ন তথ্য। এ সময় রোগীদের রেজিষ্টার্ড বহিতে সম্পৃক্ত করণ কর্তৃপক্ষ দু'জনের মধ্যে একজনের নাম জানতে চাইলে জনৈক ব্যক্তির নাম কামরুজ্জামান বলে জানালেন। তিনি অত্র স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ক্লিনার। একজন ক্লিনারের তো ওই সময় হাসপাতালের পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার কাজে থাকার কথা। কিন্তু কেন তিনি সে কাজ ছেড়ে টিকিট কাউন্টারে রোগীদের টিকিট দিচ্ছেন সেটি ভাববারই বিষয়। এ দিন রোগীদের উপস্থিতি অনেক বেশিই মনে হয়েছিলো । টিকিট কাউন্টারে জিজ্ঞাসা করে জানা গেছে, অত্র স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রতিদিন প্রায় সাড়ে চারশত থেকে পাঁচশত রোগীর আগমন ঘটে।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্যাথোলজি বিভাগের ইনচার্জ ইয়াসিন আলি জানান, প্রতিদিন এত বেশি রোগী মল,মুত্র কফ-কাশি,রক্ত ও ডায়াবেটিস সহ বিভিন্ন সমস্যার পরিক্ষার জন্য আসেন এসবের পরিক্ষার ব্যবস্থাপত্র দিতে হিমশিম খেতে হয়। কখোন কখোন রোগীর সংখ্যা বেশি হলে সবিনয়ে তাদের পরের দিন সকাল সকাল আসতে বলি। এ সময় এক প্রসূতি মেয়েকে প্রবসে জন্য আসা জেলার হাকিমপুর উপজেলার মাধবপাড়া গ্রামের জনৈক ইসরাইল তার মেয়ের ব্যবস্থাপত্র নিতে এসে চিকিৎসককে না পেয়ে অফেক্ষায় প্রহর গুনতে দেখা গেছে।
বিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বহি বিভাগের জররী বিভাগ,পুরুষ বহির বিভাগ, মহিলা বহির বিভাগ, আই এম সি আই (শিশু) কর্ণার, টেলি মেডিসিন ভায়া কর্ণার, অন্ত বিভাগের প্রসূতি বিভিগ, মহিলা ওয়ার্ড ও পুরুষ ওয়ার্ড সহ আরো অন্যান্য বিভাগে উপস্থিত রোগিদের চিকিৎসক অভাবে ছুটাছুটি বেশ লক্ষনীয়।
এ বিষয় বিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ইনচার্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মোঃ গোলাম রসুল রাখি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, বিরামপুর উপছেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তুলনামুল রোগীর চাপ বেশি। অত্র স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রোগীদের জন্য পর্যাপ্ত ঔষধ ও রয়েছে। কেবল চিকিৎসকই নয়, অন্যান্য জনবলেরও অভাব রয়েছে। তিনি আরো জানান, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বহি বিভাগের জররী বিভাগ,পুরুষ বহির বিভাগ, মহিলা বহির বিভাগ, আই এম সি আই (শিশু) কর্ণার, টেলি মেডিসিন ভায়া কর্ণার, অন্ত বিভাগের প্রসূতি বিভাগ, মহিলা ওয়ার্ড ও পুরুষ ওয়ার্ড সহ আরো অন্যান্য বিভাগে ২০ জন চিকিৎসকের প্রয়োজন। সেখানে বর্তমানে মাত্র ৫ জন চিকিৎসক রয়েছেন।
এরই মধ্যে ২ জন প্রশিক্ষণে আছেন। এত কম চিকিৎসক নিয়ে কি ভাবে এত বেশি রোগিদের সেবা দিতে পারি বলুন ? বিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটির স্বাস্থ্যসেবার মান অক্ষুন্ন রাখতে ও প্রতিনিয়ত রোগিদের কাঙ্ক্ষিত স্বাস্থ্যসেবা সুনিশ্চিত করতে স্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিটি বিভাগে চিকিৎসকের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে এলাকার সর্বস্তরের সচেতন মহল স্বাস্থ্য বিভাগসহ সংশ্লিষ্ট উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
0 মন্তব্যসমূহ