শাহিন খন্দকার , পূর্বধলা (নেত্রকোনা) প্রতিনিধিঃ নেত্রকোনার পূর্বধলায় ইজারাকৃত রাজধলা বিলে দীর্ঘদিন ধরে চলছে অবৈধ ভাবে অবাধে মাছ শিকার। ইজারাদারকে পাশ কাটিয়ে স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী ও অবৈধ জেলেরা গোপনে কারেন্ট জাল, চায়না দুয়ারী জাল, শিপজাল ও বরশি দিয়ে অবৈধভাবে মাছ শিকার করে চলছিল।
গতকাল বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) দুপুরে পূর্বধলা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ খবিরুল আহসান ও উপজেলা মৎস্য অফিসার মোঃ আশরাফুল ইসলাম স্বশরীরে উপস্থিত থেকে অবৈধ ভাবে মাছ শিকার করতে আসা লোকজনকে ইজারাকৃত রাজধলা বিলে মাছ ধরতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ ও আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে ইজারাকৃত বিল থেকে সকল ধরনের জাল উঠিয়ে নেওয়ার নির্দেশ প্রদান করতে দেখা গেছে। এছাড়া ইজারাকৃত রাজধলা বিলে অবৈধ ভাবে অবাধে মাছ শিকার থেকে বিরত থাকতে এলাকায় মাইকিং করা হয়েছে।
মাইকিংয়ে বলা হয়, 'একটি বিশেষ ঘোষণা, এতো দ্বারা সর্বসাধারণের অবগতির জন্য জানানো যাইতেছে যে, পূর্বধলা রাজধলা বিল বাংলাদেশ সরকারের লিজ প্রদানকৃত সম্পত্তি। রাজধলা বিলে অবৈধ ভাবে মাছ ধরা থেকে বিরত থাকার জন্য বিশেষ ভাবে নির্দেশ প্রদান করা হইল, অন্যথায় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হইবে, আদেশক্রমে রাজধলা বিল কর্তৃপক্ষ'।
এ বিষয়ে বালিয়া মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির সভাপতি সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ জেলেরা আমাদের ইজারাকৃত রাজধলা বিলে জোরপূর্বকভাবে মাছ শিকার করছে। নিষিদ্ধ অবৈধ কারেন্ট জাল চায়না দুয়ারি জাল শিপজাল ও বরশি দিয়ে মাছ ধরে নিয়ে যায় প্রভাবশালীরা। সমিতির লোকজন কিছু বলতে গেলে হুমকি দেয়। মাছ ধরার জন্য প্রভাবশালীরা নিষিদ্ধ জাল ব্যবহার করছে।
এতে মাছের পোনা ধ্বংস হচ্ছে ও মাছের প্রজনন ব্যাহত হচ্ছে। এ বিষয়ে জানতে পূর্বধলা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ খবিরুল আহসান বলেন, রাজধলা বিল সরকারের লিজ প্রদানকৃত সম্পত্তি। মাইকিংয়ের মাধ্যমে সতর্ক করে অবৈধ ভাবে মাছ শিকার করতে নিষেধ করা হয়েছে। শিপজাল, বরশি শিকারিদের নিষেধ করা হয়েছে।
জানা গেছে, ১৩০ একর জায়গা নিয়ে উপজেলার ঐতিহ্যবাহী রাজধলা বিলটি জেলা প্রশাসন থেকে ৬ বছরের জন্য ইজারা দেওয়া হয়েছে।
উপজেলার বালিয়া মৎস্যজীবি সমিতি নামে একটি মৎস্যজীবি সংগঠন সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে ইজারা পায়। প্রথম বছরে ইজারামুল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ভ্যাট ব্যতীত ৮লক্ষ ৮৩হাজার ২৬ টাকা।
নতুন মৎস্যজীবি সংগঠন ইজারা পাওয়ার পর বিলে প্রচুর দেশীয় প্রজাতির পোনা মাছ ছাড়ে এবং বিলে মাছ ধরা নিয়ে সবার জন্য বিধি নিষেধ আরোপ করে।
এলাকাবাসীর চাপের মুখে গত ৭জুলাই স্থানীয় সাবেক সংসদ সদস্যের উপস্থিতিতে উপজেলা প্রশাসন ইজারাকৃত রাজধলা বিলে মাছ ধরার জন্য উন্মুক্ত ঘোষনা করার পর বিভিন্ন এলাকা থেকে এবং স্থানীয়রাও বরশি দিয়ে মাছ ধরার হিড়িক পড়তে দেখা যায়।
এছাড়া কারেন্ট জাল, চায়না দুয়ারী জাল, শিপজাল দিয়ে মাছ ধরার হিড়িক পড়তে দেখা যায়। এতে ইজারাদর কর্তৃক রাজধলা বিলে ছাড়া প্রচুর দেশীয় প্রজাতির পোনা মাছসহ ছোট থেকে বড় সকল ধরনের মাছ শিকার করে নিয়ে যায় শিকারীরা।
এই পোস্টটি আপনার সামাজিক মিডিয়াতে শেয়ার করুন।
শাহিন খন্দকার ,
পূর্বধলা, নেত্রকোনা।
তারিখঃ ২৫/১০/২০২৪
মোবাইলঃ ০১৭৫০৩২৪১২১
0 মন্তব্যসমূহ