গৌরীপুর (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধিঃ ময়মনসিংহের গৌরীপুর পৌর শহরের ২ নম্বর রেলক্রসিং এলাকায় শনিবার (২ নভেম্বর ২০২৪) সাহসী গেইটম্যান মো. আমির হোসেনের দ্রুত পদক্ষেপে বড় ধরনের রেল দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব হয়েছে। তার বিচক্ষণতায় চট্টগ্রাম-জামালপুর রেলপথে চলাচলরত বিজয় ট্রেন এবং তার যাত্রীদের জীবন বিপদের মুখ থেকে রক্ষা পায়।
ঘটনার বিবরণে গেইটম্যান আমির হোসেন জানান, ট্রেন আসার কিছুক্ষণ আগে একটি ইটবোঝাই লরি ট্রাক রেলগেইটের উপর বিকল হয়ে পড়ে। ট্রাকের ইঞ্জিন হঠাৎ করেই বিকল হয়ে যায় এবং ইটবোঝাই ট্রাক রেললাইনের ওপর আটকে যায়। সময় যতই দ্রুত শেষ হয়ে আসছিল, ট্রেনও কাছে আসছিল। পরিস্থিতি সংকটময় হয়ে ওঠে। তখন আমির হোসেন লাল পতাকা নিয়ে ছুটে গিয়ে ট্রেনটিকে থামানোর চেষ্টা করেন এবং সফল হন।
এ সময় শত শত মানুষ ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন। প্রত্যক্ষদর্শী ও পৌর শহরের কৃষক দল নেতা রফিক উদ্দিন চৌধুরী জানান, "আমরা দেখলাম, চারদিকে চিৎকার-চেঁচামেচি চলছে। গেইটম্যান লাল পতাকা নিয়ে ট্রেনের দিকে দৌড়াচ্ছেন। শত শত মানুষের আর্তনাদের মধ্যে ট্রেনটি এসে প্রায় দুর্ঘটনাস্থলের কাছেই থেমে যায়। আমরা সবাই স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলি। এমন বীরত্বপূর্ণ কাজ আগে কখনও দেখিনি।"
দুর্ঘটনার শিকার লরি ট্রাকের চালক, গোলকপুর গ্রামের আজমত আলীর পুত্র তাইজুল ইসলাম সাইমন জানান, "গাঁওগৌরীপুর ইটভাটা থেকে ইট নিয়ে ময়মনসিংহের দিকে যাচ্ছিলাম। হঠাৎ ইঞ্জিন বিকল হয়ে ট্রাকটি রেললাইনে আটকে যায়। গেইটম্যান লাল নিশান উড়িয়ে ট্রেন থামান, যা আমাদের সকলকে বড় দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা করে।"
এলাকাবাসীর সহায়তায় দ্রুত ইট সরিয়ে ট্রাকটি লাইনের বাইরে নেওয়া হয়। প্রায় ২০ মিনিট ধরে ট্রেনটি আটকে থাকায় রেলগেইটের দুই প্রান্তে সড়কে যানজট সৃষ্টি হয়।
গৌরীপুর রেলওয়ে জংশনের স্টেশন মাস্টার মো. সফিকুল ইসলাম জানান, "বিজয় ট্রেনটি ১৭টি কোচ নিয়ে আঠারবাড়ি রেলওয়ে স্টেশন থেকে জামালপুরের উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসে। গেইটম্যানের দ্রুত পদক্ষেপে ট্রেনটি দুর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা পায়। ট্রেনটি গৌরীপুর জংশনে নির্ধারিত সময়ের ২০ মিনিট পরে প্রবেশ করে এবং পরে জামালপুরের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে।"
প্রশংসিত গেইটম্যানের এই বীরত্বপূর্ণ কাজ বড় দুর্ঘটনার হাত থেকে হাজারো যাত্রীকে রক্ষা করেছে।
0 মন্তব্যসমূহ