ঢাকায় গুলিবিদ্ধ হয়ে দৃষ্টিশক্তি হারানো বাবুর পরিবারের অসহায় অবস্থা: ৮৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা। - ভোরের সময় অনলাইন ঢাকায় গুলিবিদ্ধ হয়ে দৃষ্টিশক্তি হারানো বাবুর পরিবারের অসহায় অবস্থা: ৮৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা।

বেকিং নিউজ

[getTicker results="10" label="random" type="ticker"]

Header Adds


ঢাকায় গুলিবিদ্ধ হয়ে দৃষ্টিশক্তি হারানো বাবুর পরিবারের অসহায় অবস্থা: ৮৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা।

মোঃ মোরসালিন আহমেদ মুসা গৌরীপুর, ময়মনসিংহ প্রতিনিধিঃ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়ে রাজপথ কাঁপানো মো. আব্দুল্লাহ বাবু আজ জীবনের এক কঠিন বাস্তবতার মুখোমুখি। আন্দোলনের সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে তিনি তার এক চোখের দৃষ্টি পুরোপুরি হারিয়েছেন, আর অন্য চোখটিও ঝাপসা হয়ে এসেছে। এই ঘটনায় বাবুর বাবা মো. আব্দুল বারিক শেখ বাদী হয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালসহ ৮৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন। মামলাটি রোববার (৩ নভেম্বর ২০২৪) ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে দায়ের করা হয়েছে।

মো. আব্দুল্লাহ বাবু ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার ডৌহাখলা ইউনিয়নের কলতাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। বাবা মো. আব্দুল বারিক শেখ, যিনি ৬৫ বছর বয়সে ড্রাইভিং পেশা ছেড়ে দিয়েছিলেন, এখন আবার সংসারের চাপে গাড়ি চালাতে বাধ্য হচ্ছেন। বাবু গুলিবিদ্ধ হওয়ার আগে গাড়ি চালিয়ে নিজের পরিবারের ভরণপোষণ করতেন এবং তার আয়ে বৃদ্ধ বাবা-মা, স্ত্রী ও একমাত্র দেড় বছরের ছেলেকে দেখাশোনা করতেন।

ঘটনাটি ঘটে গত বছরের ১৯ জুলাই, যখন ঢাকার যাত্রাবাড়ি গোলাপবাগ এলাকায় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে অংশ নিতে গিয়েছিলেন বাবু। মিছিলের সম্মুখভাগে থেকে স্লোগান দেওয়ার সময় হঠাৎ একটি বাসার ভিতর থেকে বের হয়ে পুলিশ রাবার বুলেট ছোড়ে, যা তার চোখ ও মুখে লাগে। সেই আঘাতে বাবুর বাম চোখ চিরতরে অন্ধ হয়ে যায়, এবং ডান চোখের অবস্থাও এখন বিপদজনক।

বাবু এখন চোখের চিকিৎসার জন্য সংগ্রাম করছেন, তবে তার পরিবারের আর্থিক অবস্থা অত্যন্ত খারাপ। বিভিন্ন সংগঠন থেকে আর্থিক সহায়তা পেলেও চিকিৎসার ব্যয় মেটানো কঠিন হয়ে পড়েছে। বাবুর বাবা বলেন, “আমার সন্তানের উপর যারা গুলি চালিয়েছে, আমি তাদের বিচার চাই। আমার ছেলের জীবিকা অর্জনের ব্যবস্থা না হলে তার পরিবার কীভাবে বাঁচবে?”

চার সন্তানের মধ্যে বাবু সবার ছোট। বড় দুই ভাই জীবিকার জন্য অপ্রতুল আয় করেন, আর গার্মেন্টস কর্মী তৃতীয় ভাই এখন বেকার। বাবুর স্ত্রী নাসরিন প্রীতি গৃহিণী, আর একমাত্র সন্তান আনার মিয়া এখনো খুব ছোট। বাবু বলেন, “আমরা স্বপ্ন দেখেছিলাম বৈষম্যহীন এক দেশের। সেই স্বপ্নের জন্য দৃষ্টিশক্তি হারালেও আমাদের আন্দোলন থামেনি। আমার চোখে ঝাপসা হলেও আমি ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন দেখেছি, এটাই আমার আনন্দ।”

বাবু ও তার পরিবারের সংকট এখন আরও জটিল হয়ে উঠেছে। তারা সন্তান ও পরিবারের ভবিষ্যতের চিন্তায় দিশেহারা।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ