নিজস্ব প্রতিনিধি, মোঃ মোরসালিনঃ ময়মনসিংহ-নেত্রকোনা জেলার সীমান্তবর্তী গৌরীপুর ও পূর্বধলা উপজেলার মাঝ দিয়ে প্রবাহিত ৪৬ কিলোমিটার দীর্ঘ সোয়াই নদীর খনন কাজ গত বছর শেষ হলেও গৌরীপুর উপজেলার শ্যামগঞ্জ এলাকায় নদীর মাঝখানে প্রায় ২০০ ফুট অংশ এখনও খননবিহীন রয়ে গেছে। এ অসমাপ্ত কাজ নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে ক্ষোভ ও উদ্বেগ বিরাজ করছিল।
এ প্রেক্ষিতে ২২ মার্চ, শনিবার শ্যামগঞ্জ কলেজগেট এলাকায় সাত গ্রামের মানুষ একত্রিত হয়ে মাইকিং করে বিশাল মানববন্ধনের আয়োজন করেন। মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারীরা জানান, নেত্রকোনা জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধানে গণশুনানি শেষে গৌরীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসকের অনুমতিতে খনন কাজ শুরু হয়েছিল।
তবে খনন কাজ শুরুর পরই গৌরীপুর সেনাবাহিনীর ক্যাম্প থেকে আসা সদস্যরা এসে কাজ বন্ধ করে দেন। পরে জানা যায়, কিছু ব্যক্তি নদীর মাঝখানের ওই অংশকে নিজেদের বৈধ সম্পত্তি দাবি করে হাইকোর্টে আবেদন করে স্টে অর্ডার নিয়ে এসেছেন। এ ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে চরম উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
মইকান্দা গ্রামের বাসিন্দা আনিসুজ্জামান আনিস বলেন, “যারা মালিকানা দাবি করছে তাদের সিএস অনুযায়ী জায়গা থাকলেও, পানি উন্নয়ন বোর্ড এর আগে ৬৩ জনের সিএস জায়গা খনন করে এসেছে। তখন তো কেউ আদালতের দোহাই দেয়নি।”
নদীর পাড়ের বাসিন্দা আনোয়ার হোসেন সুপ্লব বলেন, “গত সপ্তাহেও পানি উন্নয়ন বোর্ড ও সরকারি কর্মকর্তাদের নির্দেশে খনন কাজ চলছিল। হঠাৎ দখলদারদের প্ররোচনায় সেনাবাহিনীর সদস্যরা এসে কাজ বন্ধ করে দেন এবং বিভিন্ন এলাকা থেকে আনা মানুষজনের উপর হামলা চালানো হয়। এতে বেশ কয়েকজন আহত হন এবং বর্তমানে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।”
‘আমরা সচেতন শ্যামগঞ্জবাসী’-এর আহ্বায়ক সৈয়দ এস এম ঋজু জানান, খনন কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। আজকের মানববন্ধনে সাত গ্রামের মানুষ অংশ নিলেও, ভবিষ্যতে আরও সাত গ্রামের মানুষকে সঙ্গে নিয়ে বৃহত্তর কর্মসূচি ঘোষণা করবেন বলে জানান তিনি।
এলাকাবাসীর দাবি, সরকারি অনুমোদিত খনন কাজকে বাধাগ্রস্ত না করে, দ্রুত আইনগত জটিলতার সমাধান করে সোয়াই নদীর খনন কাজ সম্পন্ন করতে হবে। তারা মনে করেন, এটি শুধু উন্নয়ন কাজ নয়, বরং সাধারণ মানুষের জীবনমান রক্ষার প্রশ্নেও এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।
0 মন্তব্যসমূহ